প্রথম আলোর ওপর হামলার ঘটনা দেশের সংবাদমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বাক?স্বাধীনতা, ভিন্নমতের প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর একটি কঠিন আক্রমণ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে বিকাল চারটায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে তিনি এ সব কথা বলেন। দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন প্রথম আলোর কর্মীরা। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও যোগ দেন। মানববন্ধনে সাজ্জাদ শরিফ বলেন, একই সঙ্গে ডেইলি স্টারের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটি একটি কালো দিন সংবাদমাধ?্যমের জন?্য, বাকস্বাধীনতার জন?্য, গণতন্ত্রের জন?্য। দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত জুলাই অভ্যুত্থানের মুখ শরীফ ওসমান বিন হাদি বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে এই আক্রমণ চালায় বলে প্রথম আলো মনে করছে।
সাজ্জাদ শরিফ বলেন, পরিকল্পিতভাবে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই সংগঠিত আক্রমণটি চালিয়েছে। আমাদের সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকিতে ছিলেন, প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতার মধে?্য ছিলেন। তারা বাধ?্য হয়ে পত্রিকা প্রকাশ না করে সাংবাদিকতার কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যান। প্রথম আলো প্রতিষ্ঠার পর গত ২৭ বছরে এই প্রথম শুক্রবার প্রথম আলো প্রকাশিত হয়নি। আমাদের অনলাইনও বন্ধ আছে। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে যে, আগামী নির্বাচনকে পথভ্রষ্ট করার জন?্য, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সরকারের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে নেতিবাচক করে ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার জন?্য এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। হামলাকারীদের বাংলাদেশের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক বলেন, আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাই এবং দাবি জানাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। যারা দোষী তাদের খুঁজে বের করা হোক। নাগরিক সমাজকে প্রথম আলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার অনুরোধ করেন তিনি। মানববন্ধনে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হকসহ সংবাদপত্রের সব বিভাগের কর্মীরা অংশ নেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য কাজী রওনাক হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মেহেদী আজাদ মাসুম, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, সাবেক সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন।
