ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হ্যারি কেইন জানান বিশ্বকাপ জয় ছাড়া আর কিছুই তার দল কিংবা দেশকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বায়ার্ন মিউনিখের এ স্ট্রাইকার জানান, বড় টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ভালো খেললেও চূড়ান্ত সাফল্যের সময় এসেছে থ্রি লায়ন্সদের। দুর্দান্ত ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে ইংল্যান্ড। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তারা আছে চতুর্থ স্থানে। থমাস তুখেলের অধীনে বাছাইপর্বের আট ম্যাচেই জিতেছে দলটি। বাছাইপর্বে কোনো গোল হজম না করা ইংল্যান্ড প্রতিপক্ষের জালে ১৮ বার বল পাঠিয়েছে। এ পারফরম্যান্স দিয়ে এবারের বিশ্বকাপে ‘এল’ গ্রুপে ঘানা, ক্রোয়েশিয়া ও পানামার সঙ্গী হয়েছে ইংল্যান্ড। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দলটিকে সাফল্য পেতে চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি আশা দিচ্ছে। টানা ১০ ম্যাচে কোনো গোল হজম না করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। এর আগে এ রেকর্ডটি ছিল স্পেনের। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কোনো গোল হজম না করে টানা ১০ ম্যাচে জিতেছিল তারা। নতুন এ রেকর্ড গড়ার পর বড় শিরোপার খোঁজে ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ সালের পর এখনো বড় কোনো শিরোপা আসেনি তাদের ঘরে।
এর মধ্যে গত বছর ইউরোর শিরোপা জয়ের কাছাকাছি ছিল দলটি। কিন্তু ফাইনালে স্পেনের কাছে হারের ওই হতাশা এখনো তাড়া করে বেড়াচ্ছে কেইনকে। তার মতে, শিরোপা না জিতলে ইংল্যান্ড দলকে ঘিরে থাকা ‘নেতিবাচক আওয়াজ’ থামবে না। কেইন বলেন, ‘আমরা এখন এমন একপর্যায়ে আছি, যেখানে জয় ছাড়া আর কিছুই আমাদের কিংবা দেশের মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। গত ইউরোতে আমরা সেটা কিছুটা বুঝেছি। ফাইনালে উঠেও আমাদের ঘিরে নেতিবাচক আলোচনা ছিল। আমরা জানতাম, জিততে না পারলে এই শব্দ থামবে না, আর সেটাই হয়েছে।’গত কয়েক বছরে ইংল্যান্ডের অগ্রযাত্রার কথাও তুলে ধরেন কেইন। তিনি বলেন, ‘২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, এরপর ফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনাল, আবার ফাইনাল- আমরা বারবার দরজায় কড়া নাড়ছি। ধারাবাহিকভাবে আমরা বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি। এবার টুর্নামেন্টে যাওয়ার সময় প্রত্যাশাটাও বড়। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আমরা চার নম্বরে, মানুষ আমাদের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে দেখছে। এই চাপ মেনেই খেলতে হবে।’
ইংল্যান্ড অধিনায়ক আরও বলেন, ‘গত আট বছরে জাতীয় দল হিসেবে আমাদের অনেক ভালো মুহূর্ত এসেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার কাছে এখন একটাই বিষয় গুরুত্বপূর্ণ- জেতা, বড় শিরোপা জেতা। আমাদের সেই মান আছে, এখন দরকার বড় মুহূর্তগুলো সামলানোর মানসিকতা।’
বড় টুর্নামেন্টের চাপ ও রোমাঞ্চ নিয়েও কথা বলেছেন কেইন। তিনি বলেন, ‘যেকোনো বড় টুর্নামেন্ট একজন ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়। চাপ আর রোমাঞ্চও তখন সর্বোচ্চ থাকে। আমি নিজেকে সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে সামলাই, দল কীভাবে সামলায়- সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি।’ ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেয়া যে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সম্মান, সেটাও আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন কেইন। ৩২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ২৪ বছর বয়সেই প্রথমবার ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হন। কেইন বলেন, ‘অনেক সময় ভেতরে থাকলে বোঝা যায় না আপনি কতো বড় দায়িত্ব পালন করছেন বা কতোটা কম বয়সে সেটা শুরু করেছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা ছিল স্বপ্ন, কিন্তু ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হওয়াই ছিল ক্যারিয়ারের চূড়া। ছোটবেলা থেকেই আমি ইংল্যান্ডের বড় ভক্ত ছিলাম, ক্লাবের চেয়েও বেশি। এই দায়িত্ব আমি কখনোই হালকাভাবে নিই না, এর গুরুত্ব আমি ভালো করেই জানি।’
